স্বদেশ ডেস্ক:
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার অধীন ন্যাশনাল ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এটিডি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে নিয়োগ করা হবে একজন কীটতত্ত্ববিদ। জাতীয় দৈনিকে এ বিষয়ে গত ৩ অক্টোবর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে চাওয়া আবেদনের যোগ্যতা অনুসারে উপযুক্ত হিসেবে মাত্র একজনই বিবেচিত হন। তবে যোগ্যতা না থাকলেও নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে আরও দুজনকে। এ যেন নিয়োগের আগেই অনিয়ম।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, কীটতত্ত্ববিদের মাসিক বেতন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আবেদনকারীর বয়সসীমা ৪৫ বছর। এর পর পদটির জন্য আবেদন করেন ১১ জন। তাদের সেই আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়ে গেল ২৪ নভেম্বর। যোগ্য প্রার্থীর তালিকা করে ২৮ নভেম্বর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিবের (বিশ^ স্বাস্থ্য অধি শাখা) কাছে পাঠান বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত
রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. ইকরামুল হক। তিনি জানান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিশাখা) নিলুফার নাজনীনের নেতৃত্বে আবেদনপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। ওই কমিটিতে আরও ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিশাখা), উপসচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য-১), উপসচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য-২), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও বিসিসিএম কো-অর্ডিনেটর। চাকরির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করা ১১ প্রার্থীর মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার যোগ্য পাওয়া যায় মাত্র একজনকেই। কিন্তু এর পরও অযোগ্য দুই প্রার্থীকে বিশেষ বিবেচনায় সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে বাছাই কমিটি। নির্ধারিত বয়সসীমাই এ দুজনের প্রধান অযোগ্যতা। এ বিষয়ে বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. ইকরামুল হক চিঠিতে লিখেন- এ দুই প্রার্থীর অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ বাকি সব যোগ্যতাই ঠিক আছে। তবে তালিকায় থাকা আবেদনকারী রাজীব চৌধুরীর বয়স ৫২ বছর এবং মো. খলিলুর রহমানের বয়স ৫৪ বছর।
এদিকে প্রাথমিকভাবে অযোগ্য দুজনকে যোগ্য হিসেবে বাছাই করা হলেও মূল নিয়োগ কমিটি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, ২-৩ বছর বিবেচনায় আনা যায়। কিন্তু একজনের বয়স নির্ধারিত সীমা থেকে সাত বছর এবং অন্যজনের নয় বছর বেশি হওয়ায় যোগ্য এক প্রার্থীকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেভাবেই আয়োজন করা হয় পরীক্ষার। এর পরই ঘটে বিপত্তি। ওপর মহলের চাপে অযোগ্য আরও দুজনকে দেওয়া হয় পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার প্রবেশপত্র। জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আমাদের সময়কে জানান, অযোগ্য এক প্রার্থীকে সেই পদে বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা এবং চিকিৎসক এক নেতা। এ ক্ষেত্রে তারা কোনো নিয়ম-নীতিরই তোয়াক্কা করছেন না। নীরবেই মন্ত্রণালয়ের অনৈতিক নির্দেশ পালন করছে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। আমাদের সময়কে কেবল তিনি বলেন, ‘বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। আমার বলার কিছুু নেই।’